হারিয়ে গেলে খুজবে না তো|জান্নাত| পর্ব-১
জানেন ভাবি আমার জামাইর গা থেকে মাঝে মাঝে কি বিচ্ছিরি ঘ্রান আসে বলে বোঝাতে পারবো না।কখনো কখনো তো আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। কথা গুলো বলে নাক সিটকালো নিশাত। মুখের রিয়াকশন এমন দিলো যেন সত্যি সত্যি।
কি বলেন ভাবি আমার বিশ্বাস হয় না ওতো সুন্দর সুদর্শন পুরুষ কিনা এমন হবে তাছাড়া ভাইয়া কতো স্টাইলিশ ওমন্ পুরুষ পাওয়া প্রতিটা মেয়ের স্বপ্ন। কথাটা বলে কেমন লজ্জা লজ্জা পাচ্ছিলো । আপনি নিশ্চই আমার সাথে ইয়ার্কি করছেন তাইনা।
পাশের বাসার ভাবির মুখে নিজের স্বামীর প্রশাংসা সুনে নিশাতের মাথায় আগুন জ্বলে উঠলো। কিন্তু তার এখন মাথা গরম করলে তো হবে না ।
তারপর নিশাত আবার বললো। আপনার ও স্বপ্ন ছিলো তাইনা ভাবি একজন সুদর্শন স্বামীর হিহি দাত কেলিয়ে,,, অবশ্য আপনার কপালে জুটলো টাক ওয়ালা ভুরি ওয়ালা জামাই।
নিশাতের কথা সুনে অপমান বোধ করলো তুলি। তারপর তুলি নিশাত কে বললো,,, মুখ সামলে কথা বলুন ভাবি। রেগে
নিশাত জিভে কামর দিলো। এইরে ভুল সময় ভুল কথা বলে ফেললো,,, তারপরে আমতা আমতা করে বললো আসলে ভাবি আমি তেমন বলতে চাইনি হয়েছি কি যানেন।
আসলে এই বাসায় আমার মন বোঝার মতো কেউ নেই। সারাদিন আমায় খাটায়। মনের দুঃখ গুলো যে কারো কাছে সেয়ার করব এমন কেউ নেই আমার। মন খারাপের ভান করে কথা গুলো বললো নিশাত।
তুলি এবার শান্ত হলো,, আসলে তার স্বামী কে তার পছন্দ নয়। বাবা মা বড়লোক দেখে বিয়ে দিয়েছে। তাকে জোর করে, কিন্তু আবিদ চৌধুরী কে তার খুব পছন্দ। কারন আবিদ অনেক সুন্দর সে কেনো,,,যেকোনো মেয়েই তাকে পছন্দ করবে। তাই তো সে আবিদ কে দেখার জন্য চৌধুরী বাড়ির আশেপাশে ঘুরঘুর করে।
যা নিশাত লক্ষ করেছিলো, সে চাইলেই ঝামেলা বাধাতে পারতো তুলির সাথে কিন্তু তাতে ক্ষতি তারই কারন আবিদ চৌধুরী তাকে বউ হিসেবেই মানে না। তাই যদি তার কানে যায় যে তার জন্য সে ঝামেলা করেছে তাহলে তার গালে দু চারটা চর ও পরতে পারে তাই তো এতো আয়োজন।
মায়রা নিশাত কে খুজতে খুজতে ছাদে আসলো। কিন্তু এসে দেখলো নিশাত পাশের বাসার তুলি ভাবির সাথে কথা বলছে খুব সিরিয়াস ভাবে। তার বান্ধবী কে বিশ্বাস নেই,, আবার কখন কি বলে ফেলে তাই আর সামনে এগুলো না ।সুনতে থাকলো নিশাত কি বলে
কি হলো ভাবি আপনিও কি আমার মনের কথা সুনবেন না। ন্যাকা সুরে,,,
হ্যাঁ হ্যাঁ সুনবো তো বলেন। নিশাত এবার একটু নরে চরে বসলো তারপর বলা শুরু করলো,,, যানেন ভাবি বিয়ের আগে আমি কতো স্বপ্ন দেখতাম আমার জামাই হবে একদম হিরোদের মতো ডাসিং বয়। আর সাথে হবে রোমান্টিক,,, কিন্তু আমার ইচ্ছের সেগুরে বালি। একটা স্বপ্ন সত্যি হয়েছে বটে হিরোদের মতো জামাই পাইছি বটে। কিন্তু সে রোমান্টিক না সারাদিন কথা সুনায় আমায় কাজের বেটির মতো ট্রিট করে। গোসল করে না,,, শুধু যখন অফিসে যায় তখন গোসল করে।,,,,,, সারাদিন ফোন নিয়ে সুয়ে থাকে গা থেকে কি বিচ্ছিরি গন্ধ আসে বলে বোঝাতে পারবো না।
তুলি হা করে তাকিয়ে রইলো নিশাতের দিকে। কারন নিশাত এমন ভাবে কথা গুলো বলতেছে যেন কথা গুলো সত্যি এবং তাকে খুব অত্যাচার করে ওই লোক।
ওদিকে বান্ধবীর মুখে নিজের ভাইয়ের নামে এমন কথা সুনে মায়রা হা করে রইলো। এসব যদি তার ভাইয়ের কানে যায় তাহলে নিশাতের কপালে দুঃখ আছে।
এদিকে নিশাত মনে মনে। বাহ আমার কথায় কাজ হচ্ছে তাহলে,,, শাকচুন্নি আমার জামাইয়ের দিকে নজর দেয়া। সময় আসুক তোর চুল ছিরবো আমি ।
তুলি বললো। ভাবি আপনি ওই লোকের সাথে তাহলে কিভাবে থাকেন, দেখতে কতো সুন্দর অথছো এমন ছি আপনার তো অনেক কষ্ট হচ্ছে থাকতে তাইনা।
হ্যা ভাবি কি আর বলবো। আপনার জামাই টাকলা হলেও তো আপনাকে ভালোবাসে তাইনা। আর আমার কপাল দেখুন,,, মন খারাপ করে।
আপনার সাথে মনের কথা সেয়ার করে খুব ভালো লাগলো্ ভাবি। আপনিই একমাত্র ব্যাক্তি যাকে মনের দুঃখ গুলো বললাম। আপনি কাউকে বলবেন না প্লিজ,,,
তুলি তার উওরে বললো,, দুঃখ কইরেন না ভাবি। আপনি নিশ্চিন্তে আমাকে বলতে পারেন। আর আমি কাউকে বলবো না আসি তাহলে। তুলি চলে গেলো পাশাপাশি বাড়ি এক ছাদ থেকে আরেক ছাদে চলে যাওয়া যায়।
তুলি চলে যাওয়ার সাথে সাথে মায়রা দৌরে নিশাতের কাছে গেলো
নিশাত তূই আমার ভাইয়ের নামে বদনাম করছিলি কেন আর আমার ভাই গোসল করে না তাইনা। নিশাতের কান ধরে,
আরে ছার বান্ধবী,, লাগছে তো। আর বলবো না তো কি করবো ওই মহিলা আমার জামাইর দিকে নজর দিছে। জামাই নিয়ে আমি কোনো রিস্ক নিবো না সে তুই যাই বলিস। মুখ ভেঙিয়ে,,,
কিন্তু নিশাত তুই কিভাবে বুঝলি যে তুলি ভাবি ভাইয়াকে পছন্দ করে।
আরে যখনই আবিদ বাহিরে বের হয় তখন দেখি তুলি ভাবি সেজে গূজে তার এটেনশন পাওয়ার চেষ্টা করে সব সময় নজর থাকে এই বাড়ির দিকে। আর আমি কিভাবে এসব হতে দি বলতো,,, তোর ভাইকে কতো কষ্টে বিয়ে করলাম বিয়ের এক বছর হয়ে গেলো এখনো বাসর টাই করতে পারলাম না। সরি দোস্ত তোকে মনে হয় এ জনমে ফুফি ডাক সোনাতে পারবো না। মন খারাপ করে কথা গুলো বললো নিশাত।
ওহ আচ্ছা তাই বুঝি বাসর করার খুব সখ তাইনা চিৎকার করে কথা গুলো বললো আবিদ।
আবিদের চিৎকারে নিশাত আর মায়রা এক প্রকার লাফিয়ে উঠলো।
আবিদ রেগে আছে তা তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। নিশাতের তো যায় যায় অবস্থা,,,,, তার সব কথা আবার সুনে ফেললো না তো।
এসব ভাবার মাঝেই আবিদ তাদের সামনে এসে দারালো।
দেখে মনে হচ্ছে রেগে আছে। নিশাত আমতা আমতা করে বললো, আরে তুমি কখন এলে এই মায়রা তুই আগে বলবি না । মায়রা অসহায় চোখে তাকালো নিশাতের দিকে সে তো নিজেও জানতো না।
্এরই মাঝে আবিদ বললো,,, মায়রা তুই নিচে যা। মায়রা চলে যাচ্ছলো নিশাত ও তার সাথে হাটা ধরলো এখানে থাকা এখন রিস্ক,,, এখনো সে শিওর না আবিদ তার সব কথা সুনেছে কিনা।
এই তুমি কোথায় যাচ্ছ তোমাকে আমি যেতে বলেছি। আবিদের কথা সুনে নিশাত মায়রার হাত টা ধরলো শক্ত করে । মায়রার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো
তা দেখে মায়রা বললো। ভাইয়া তুমি নিশাত কে কিছু বলো না, আসলে,,, আর কিছু বলতে পারলো না।
তার আগেই আবিদ বললো।
(আজাইরা আছি দেখে গল্পটা লেখলাম। প্লিজ কেউ বাজে মন্তব্য কোরো না ভালো না লাগলে।
ডিলেট করে দেবো।)
0 Comments