যুদ্ধবিমান আধুনিক সামরিক শক্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শক্তি, প্রযুক্তি এবং গতি - এই তিনটি বিষয় একটি যুদ্ধবিমানের সক্ষমতা নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
আজকে আমরা আলোচনা করবো বিশ্বের সেরা ৩টি উন্নত যুদ্ধবিমান সম্পর্কে!
চলুন জেনে নেই আকাশের রাজা! বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত এবং ভয়ংকর ৩টি যুদ্ধবিমান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য:
১. লকহিড মার্টিন এফ-২২ র্যাপ্টর (Lockheed Martin F-22 Raptor):
Lockheed Martin F-22 Raptor হলো পঞ্চম প্রজন্মের একটি স্টেলথ ফাইটার জেট যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর জন্য তৈরি করা হয়েছে।
এটিকে প্রায়শই বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত এবং প্রভাবশালী এয়ার সুপ্রিমেসি ফাইটার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো আকাশপথে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা, তবে এটি স্থল হামলা, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার এবং সংকেত গোয়েন্দা মিশনেও সক্ষম।
Lockheed Martin F-22 Raptor এর প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ:
স্টেলথ প্রযুক্তি:
F-22-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এর উচ্চমানের স্টেলথ সক্ষমতা।
এর ডিজাইন এবং রাডার-শোষণকারী উপকরণ (RAM) এটিকে শত্রুর রাডার সিস্টেমে প্রায় অদৃশ্য করে তোলে।এটি "লো অবজারভেবল" (Low Observable) প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যার ফলে এটি অত্যন্ত কম রাডার ক্রস-সেকশন (RCS) প্রদর্শন করে, যা একটি মার্বেলের আকারের মতো ছোট হতে পারে।
সুপারক্রুজ (Supercruise):
22 আফটারবার্নার ব্যবহার না করেই সুপারসনিক গতিতে (ম্যাক ১.৫ এর বেশি) উড়তে পারে,এই ক্ষমতা এটিকে দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ গতিতে ফ্লাইট চালিয়ে যেতে এবং দ্রুত কৌশলগত অবস্থান পরিবর্তন করতে সহায়তা করে, যা জ্বালানি সাশ্রয় করে এবং ইঞ্জিনের আয়ু বাড়ায়।
চরম গতিশীলতা (Extreme Agility):
এর শক্তিশালী প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনি F119-PW-100 টার্বোফ্যান ইঞ্জিন (প্রতিটি ৩৫,০০০ পাউন্ড থ্রাস্টের) এবং থ্রাস্ট ভেক্টরিং সিস্টেম এটিকে অতুলনীয় গতিশীলতা দেয়।
থ্রাস্ট ভেক্টরিং মানে হলো ইঞ্জিনগুলো বিভিন্ন দিকে থ্রাস্টকে পরিচালিত করতে পারে, যা বিমানটিকে অত্যন্ত দ্রুত মোড় নিতে এবং উচ্চ গতির সত্ত্বেও অসাধারণ কসরত প্রদর্শন করতে সক্ষম করে।
তথ্য ফিউশন (Information Fusion) এবং উন্নত এভিওনিক্স:
F-22-এর সেন্সর সিস্টেমগুলি থেকে প্রাপ্ত সমস্ত তথ্য পাইলটের কাছে একটি সমন্বিত এবং সুস্পষ্ট ছবিতে উপস্থাপন করা হয়,এর উন্নত AN/APG-77 AESA (Active Electronically Scanned Array) রাডার সিস্টেম পাইলটকে একই সাথে অনেক লক্ষ্যবস্তু সনাক্ত করতে এবং ট্র্যাক করতে সাহায্য করে, যা পাইলটের পরিস্থিতিগত সচেতনতা (situational awareness) অনেক বাড়িয়ে তোলে।
এটি অন্যান্য বন্ধুত্বপূর্ণ বিমানের সাথে রিয়েল-টাইম ডেটা শেয়ার করতে পারে।
অভ্যন্তরীণ অস্ত্রাগার:
স্টেলথ বৈশিষ্ট্য বজায় রাখার জন্য, F-22 তার বেশিরভাগ অস্ত্র বিমানের অভ্যন্তরীণ বগিতে বহন করে, এতে ছয়টি AIM-120 AMRAAM (মধ্যম-পাল্লার রাডার-নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র) এবং দুটি AIM-9 সাইডউইন্ডার (শর্ট-রেঞ্জ হিট-সিঁকিং ক্ষেপণাস্ত্র) সহ একটি M61A2 20mm ক্যানন থাকতে পারে।
স্থল হামলার জন্য এটি দুটি ১,০০০ পাউন্ডের GBU-32 JDAM (Joint Direct Attack Munition) বা আটটি SDB (Small Diameter Bomb) বহন করতে পারে।
কর্মক্ষমতা:
* সর্বোচ্চ গতি: ম্যাক ২.২ এর বেশি (প্রায় ১৫০০ মাইল/ঘণ্টা বা ২৪১৪ কিমি/ঘণ্টা)।
* পাল্লা: প্রায় ১,৬০০ নটিক্যাল মাইল (৩,০০০ কিমি) দুটি বাহ্যিক জ্বালানি ট্যাংক সহ।
* সেবার সর্বোচ্চ উচ্চতা: ৬৫,০০০ ফুটের উপরে (১৯,৬০০ মিটার)।
* দৈর্ঘ্য: ৬২ ফুট (১৮.৯ মিটার)।
* উইংস্প্যান: ৪৪.৫ ফুট (১৩.৫৬ মিটার)।
২. লকহিড মার্টিন এফ-৩৫ লাইটনিং II (Lockheed Martin F-35 Lightning II):
লকহিড মার্টিন এফ-৩৫ লাইটনিং II (Lockheed Martin F-35 Lightning II) হলো একটি পঞ্চম প্রজন্মের মাল্টিরোল স্টেলথ ফাইটার জেট, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্র দেশগুলোর জন্য ডিজাইন ও তৈরি করা হয়েছে।
এটি বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত এবং বহুমুখী যুদ্ধবিমানগুলির মধ্যে অন্যতম।
এর মূল উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন ধরনের মিশন যেমন - আকাশপথে আধিপত্য, স্থল হামলা, গোয়েন্দা নজরদারি এবং ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার পরিচালনা করা।
F-35 এর প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ:
* স্টেলথ প্রযুক্তি (Stealth Technology):
F-35 এর ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে যাতে এটি রাডারে খুব কম ধরা পড়ে। এর মসৃণ আকৃতি, রাডার-শোষণকারী উপকরণ এবং অভ্যন্তরীণ অস্ত্রাগার এটিকে শত্রুর রাডার সিস্টেম থেকে প্রায় অদৃশ্য করে তোলে। এটি F-22 এর মতো উচ্চ স্তরের স্টেলথ ক্ষমতা সম্পন্ন।
* মাল্টিরোল সক্ষমতা (Multirole Capability):
F-35 শুধু একটি এয়ার সুপ্রিমেসি ফাইটার নয়, এটি স্থল হামলা, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার এবং গোয়েন্দা, নজরদারি ও রিকনেসান্স (ISR) মিশনেও সমানভাবে কার্যকর। এটি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র বহন করতে পারে এবং বিভিন্ন পরিবেশে কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
* সেন্সর ফিউশন এবং উন্নত এভিওনিক্স (Sensor Fusion and Advanced Avionics):
35-এর উন্নত সেন্সর স্যুট (যেমন AN/APG-81 AESA রাডার, ডিস্ট্রিবিউটেড অ্যাপারচার সিস্টেম (DAS), এবং ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল টার্গেটিং সিস্টেম (EOTS)) পাইলটকে যুদ্ধের ময়দানের একটি ৩৬০-ডিগ্রি ভিউ সরবরাহ করে। এই সেন্সরগুলি থেকে প্রাপ্ত সমস্ত তথ্য একত্রিত করে পাইলটের কাছে একটি একক, সমন্বিত ছবি উপস্থাপন করা হয়, যা পরিস্থিতিগত সচেতনতা (situational awareness) অনেক বাড়িয়ে তোলে।
* নেটওয়ার্ক-সেন্ট্রিক অপারেশন (Network-Centric Operations):
F-35 একটি "ফ্লাইং সার্ভার" হিসাবে কাজ করে, যা অন্যান্য বিমান, স্থল বাহিনী এবং নৌবাহিনীর প্ল্যাটফর্মগুলির সাথে রিয়েল-টাইম ডেটা এবং তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। এটি জোটবদ্ধ সামরিক বাহিনীর মধ্যে আন্তঃকার্যক্ষমতা (interoperability) বাড়ায় এবং যুদ্ধক্ষেত্রের ক্ষমতাকে বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে।
* সুপারসনিক গতি (Supersonic Speed):
F-35 প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনি F135 ইঞ্জিন দ্বারা চালিত, যা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ফাইটার ইঞ্জিনগুলির মধ্যে একটি। এটি ম্যাক ১.৬ (প্রায় ১২০০ মাইল/ঘণ্টা বা ১৯০০ কিমি/ঘণ্টা) গতিতে উড়তে পারে, এমনকি অভ্যন্তরীণ অস্ত্র এবং জ্বালানি সহও।
* অভ্যন্তরীণ অস্ত্রাগার (Internal Weapons Bays):
স্টেলথ বৈশিষ্ট্য বজায় রাখার জন্য, F-35 তার বেশিরভাগ অস্ত্র বিমানের অভ্যন্তরীণ বগিতে বহন করে,এটি AIM-120 AMRAAM, AIM-9X সাইডউইন্ডার, এবং বিভিন্ন ধরনের গাইডেড বোমা (যেমন JDAM এবং SDB) বহন করতে পারে।
প্রয়োজনে, এটি বাহ্যিক হার্ডপয়েন্টেও অস্ত্র বহন করতে পারে, যদিও এতে এর স্টেলথ বৈশিষ্ট্য কিছুটা কমে যায়। সংস্করণসমূহ F-35 তিনটি প্রধান সংস্করণে তৈরি করা হয়েছে, প্রতিটি নির্দিষ্ট সামরিক শাখার প্রয়োজন মেটাতে ডিজাইন করা হয়েছে!
* F-35A (CTOL - Conventional Takeoff and Landing):
এটি মার্কিন বিমান বাহিনী এবং অন্যান্য মিত্র দেশের বিমান বাহিনীর জন্য তৈরি প্রচলিত উড্ডয়ন ও অবতরণ বৈকল্পিক। এটি সবচেয়ে ছোট এবং হালকা সংস্করণ এবং ৯ জি (G-force) পর্যন্ত কাজ করতে সক্ষম।
* F-35B (STOVL - Short Takeoff and Vertical Landing):
এটি মার্কিন মেরিন কর্পস এবং ব্রিটিশ রয়্যাল নেভি/রয়্যাল এয়ার ফোর্সের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এর উল্লম্ব টেকঅফ এবং অবতরণের (Vertical Takeoff and Landing - VTOL) ক্ষমতা রয়েছে, যা এটিকে ছোট রানওয়ে বা উভচর আক্রমণ জাহাজ থেকে কাজ করার অনুমতি দেয়।
* F-35C (CV - Carrier Variant):
এটি মার্কিন নৌবাহিনীর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এবং এটি বিমানবাহী রণতরী থেকে ক্যাটাপাল্ট-সহযোগে উড্ডয়ন (CATOBAR) এবং অ্যারেস্টিং হুক ব্যবহার করে অবতরণ করতে পারে। এর ডানাগুলি বড় এবং ভাঁজযোগ্য, ল্যান্ডিং গিয়ার শক্তিশালী এবং এটি সমুদ্রের পরিবেশে কাজ করার জন্য উপযুক্ত। ব্যবহারকারী দেশসমূহ F-35 প্রোগ্রাম একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রকল্প, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও যুক্তরাজ্য, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নরওয়ে, ডেনমার্ক, বেলজিয়াম এবং পোল্যান্ড সহ অনেক দেশ জড়িত। ইসরায়েল, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড এবং জার্মানি সহ আরও অনেক দেশ F-35 ক্রয় করেছে বা করার পরিকল্পনা করছে। F-35 লাইটনিং II আধুনিক যুদ্ধবিমানের একটি দৃষ্টান্ত, যা একবিংশ শতাব্দীর যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ডিজাইন করা হয়েছে।
৩. সুখোই সু-৫৭ (Sukhoi Su-57):
সুখোই সু-৫৭ (Sukhoi Su-57), ন্যাটো রিপোর্টিং নাম "ফেলন" (Felon), হলো রাশিয়ার তৈরি একটি পঞ্চম-প্রজন্মের, স্টেলথ, মাল্টিরোল ফাইটার জেট।
এটি রাশিয়ার ইউনাইটেড এয়ারক্রাফ্ট কর্পোরেশন (United Aircraft Corporation - UAC)-এর অংশ সুখোই ডিজাইন ব্যুরো দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন স্থল, আকাশ এবং সামুদ্রিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা। এটি রাশিয়ার প্রথম অপারেশনাল স্টেলথ ফাইটার।
সুখোই সু-৫৭ (Sukhoi Su-57) এর প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ:
* পঞ্চম প্রজন্ম ও স্টেলথ ডিজাইন:
Su-57-কে পঞ্চম-প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের মানদণ্ড পূরণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যার মধ্যে স্টেলথ (রাডার ফাঁকি দেওয়ার ক্ষমতা), সুপারম্যানুভারিবিলিটি (অতিরিক্ত গতিশীলতা), সুপারক্রুজ (আফটারবার্নার ব্যবহার না করে সুপারসনিক গতিতে উড্ডয়ন), উন্নত এভিওনিক্স এবং বড় অস্ত্র বহন ক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত। এর ডিজাইনটি অ্যাঙ্গুলার লাইন, ব্লেন্ডেড উইং-বডি কনফিগারেশন এবং অভ্যন্তরীণ অস্ত্রাগারের মাধ্যমে লো রাডার ক্রস-সেকশন (RCS) বজায় রাখার চেষ্টা করে। তবে, পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এর স্টেলথ সক্ষমতা নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে, বিশেষ করে F-22 বা F-35 এর তুলনায় এর পেছনের অংশ এবং কিছু জয়েন্ট এর স্টেলথকে কিছুটা ব্যাহত করতে পারে।
* সুপারম্যানুভারিবিলিটি:
Su-57-এর অন্যতম প্রধান শক্তি হলো এর অসাধারণ গতিশীলতা। এর উন্নত অ্যারোডাইনামিক ডিজাইন, সুইপ্ট উইংস, ক্যানার্ড কন্ট্রোল সারফেস (যদিও ঐতিহ্যবাহী ক্যানার্ড নয়), চলমান টেইলপ্লেন এবং থ্রাস্ট-ভেক্টরিং ইঞ্জিন নোজল এটিকে অবিশ্বাস্যভাবে দ্রুত মোড় নিতে এবং উচ্চ অ্যাঙ্গেল অফ অ্যাটাক (৬০ ডিগ্রির বেশি) অর্জন করতে সক্ষম করে। এটি "পুগাচেভ'স কোবরা" (Pugachev's Cobra) এবং "কুলবিট" (Kulbit) এর মতো জটিল কৌশল প্রদর্শন করতে পারে, যা ডগফাইটে অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।
* সুপারক্রুজ সক্ষমতা:
এটি আফটারবার্নার ব্যবহার না করেই সুপারসনিক গতিতে (প্রায় ম্যাক ১.৩) উড়তে পারে, যা জ্বালানি সাশ্রয় করে এবং বিমানের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
* উন্নত এভিওনিক্স ও সেন্সর স্যুট:
Su-57 একটি অত্যাধুনিক সেন্সর স্যুটে সজ্জিত। এর প্রাথমিক রাডার হলো একটি AESA (Active Electronically Scanned Array) X-ব্যান্ড রাডার, যা সামনের অংশে অবস্থিত। এর পাশাপাশি L-ব্যান্ডের সাইড-লুকিং রাডার রয়েছে যা লো-অবজার্ভেবল (স্টেলথ) লক্ষ্যবস্তু সনাক্ত করতে ডিজাইন করা হয়েছে। এতে একটি ইন্টিগ্রেটেড ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেমও রয়েছে, যা প্যাসিভ রাডার সনাক্তকরণ সেন্সর, সক্রিয় ডিকয় এবং জ্যামিং ক্ষমতা সম্পন্ন। পাইলটের জন্য একটি হেড-আপ ডিসপ্লে (HUD), হেলমেট-মাউন্টেড ভিশন সিস্টেম এবং বড় মাল্টিফাংশন ডিসপ্লে সহ একটি সম্পূর্ণ গ্লাস ককপিট রয়েছে, যা সামগ্রিক পরিস্থিতিগত সচেতনতা বাড়ায়।
* অস্ত্রাগার:
স্টেলথ বজায় রাখার জন্য Su-57-এর দুটি প্রধান অভ্যন্তরীণ অস্ত্রাগার (প্রায় ৪.৪ মিটার লম্বা) এবং পাখার কাছে দুটি ছোট ত্রিকোণাকার বগি রয়েছে। এটি বিভিন্ন এয়ার-টু-এয়ার (যেমন R-77M এবং R-74M2), এয়ার-টু-গ্রাউন্ড, অ্যান্টি-শিপ ক্ষেপণাস্ত্র এবং নির্ভুল-গাইডেড বোমা বহন করতে পারে। এতে একটি ৩০ মিমি GSh-30-1 ক্যাননও রয়েছে। এটি এমনকি Kh-47M2 কিনঝাল হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রের (ম্যাক ১০-এর বেশি গতি) নির্দিষ্ট কনফিগারেশনও বহন করতে সক্ষম।
* ইঞ্জিন:
বর্তমানে, Su-57 AL-41F1 (Izdeliye 117) আফটারবার্নিং টার্বোফ্যান ইঞ্জিন দ্বারা চালিত। ভবিষ্যতে, এটি আরও উন্নত "Izdeliye 30" ইঞ্জিন ব্যবহার করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা এর কর্মক্ষমতা আরও বাড়াবে।৯৫ মিটার
* সর্বোচ্চ গতি: প্রায় ম্যাক ২ (প্রায় ২৪৭০-২৯৫০ কিমি/ঘণ্টা)।
* কম্ব্যাট রেডিয়াস: প্রায় ১,২৫০ কিমি (রিফুয়েলিং ছাড়া)। ফেরি রেঞ্জ (ফেরি রেঞ্জ) ৪,০০০ কিমি পর্যন্ত।
* সেবার সর্বোচ্চ উচ্চতা: প্রায় ১৯,০০০ মিটার।
* সর্বোচ্চ টেক-অফ ওজন: ৩৪,০০০ কেজি। উৎপাদন ও ব্যবহারকারী Su-57-এর প্রথম ফ্লাইট হয়েছিল ২০১০ সালে। এটি প্রাথমিকভাবে ২০২০ সালের দিকে রাশিয়ান বিমান বাহিনীতে যুক্ত হতে শুরু করে। এর উৎপাদন সংখ্যা এখনও তুলনামূলকভাবে কম। ২০২১ সাল থেকে রাশিয়ান অ্যারোস্পেস ফোর্সেস (Russian Aerospace Forces) এর সিরিয়াল-বিল্ট বিমান পেতে শুরু করে। বর্তমানে, রাশিয়ান অ্যারোস্পেস ফোর্সেস হলো Su-57-এর প্রধান এবং একমাত্র নিশ্চিত ব্যবহারকারী।
0 Comments